দুর্ঘটনা এড়াতে বাংলাদেশ বিমানের বহরে থাকা ড্রিমলাইনারগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে বাড়তে নজর দেয়া হচ্ছে। যেকোনো ধরনের ঝুঁকি এড়াতে সংস্থাটি বোয়িং ৭৮৭ মডেলের উড়োজাহাজগুলোর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও ব্যবস্থার মান যাচাই শুরু করেছে। বতমানে বাংলাদেশ বিমানের বহরে ৬টি বোয়িংয়ের ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ রয়েছে। যেগুলো ২০১৮-১৯ সালে যুক্ত হয়েছে। তার মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ও দুটি ৭৮৭-৯ মডেলের উড়োজাহাজ। ওসব ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ দিয়ে বাংলাদেশ বিমান বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। কিন্তু সম্প্রতি ভারতে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার পর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস বহরে থাকা ড্রিমলাইনারগুলো নিয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন শুরু করেছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন এয়ারলাইনস বোয়িংয়ের ৭৮৭ ড্রিমলাইনার মডেলের উড়োজাহাজ পরিচালনা করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছে। ওই বিমানগুলোতে প্রায়ই আকাশে থাকা অবস্থায় হঠাৎ উচ্চতা হ্রাস, উইন্ডশিল্ডে ফাটলসহ বিভিন্ন কারিগরি ত্রুটি ধরা পড়ছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে থাকা উড়োজাহাজেও বিভিন্ন সময় কারিগরি ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। বাংলাদেশ বিমানের বহরে ৬টি বোয়িংয়ের ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ রয়েছে। ২০২৪ সালে ওই মডেলের উড়োজাহাজে উইন্ডশিল্ডে ফাটলের দুটি ঘটনা ঘটেছে।
সূত্র জানায়, বিমানের ঢাকা-দাম্মাম ফ্লাইট গত ২০ জানুয়ারি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ দিয়ে পরিচালানা করা হয়। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পর উড়োজাহাজটির উইন্ডশিল্ডে ফাটল দেখা দেয়। ফলে ২ ঘণ্টা পর উড়োজাহাজটি আবার ঢাকায় জরুরি অবতরণ করানো হয়। আর গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বিজি-০৩৪৮ ঢাকার উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করে। কিন্তু বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি যখন ওমানের আকাশে তখন ফ্রন্ট উইন্ডশিল্ডে ফাটল ধরা পড়ে। ঝুঁকি এড়াতে ফ্লাইটটি আবার দুবাই বিমানবন্দরে ফিরিয়ে নেয়া হয়। পরদিন উদ্ধারকারী উড়োজাহাজ পাঠিয়ে ওই ফ্লাইটের ২৪৪ যাত্রীকে ঢাকায় আনা হয়। বিমানের ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজে শুধু উইন্ডশিল্ডে ফাটল নয়, চলতি বছর ফ্লাইট পরিচালনার সময় অন্তত দুটি যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে গত ২৩ এপ্রিল চট্টগ্রাম থেকে দুবাইগামী একটি ফ্লাইটে যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দেয়। ত্রুটি সারিয়ে প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর ফ্লাইট চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। আর গত ১৪ মে ঢাকা-টরন্টো ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে সেটি ভারতের আকাশসীমা থেকে ফিরিয়ে আনা হয়।
এদিকে সম্প্রতি ভারতে বোয়িং দুর্ঘটনার পর বাড়তি সতর্কতা হিসেবে বাংলাদেশ বিমান তার বহরের ওই মডেলের উড়োজাহাজগুলোর ইঞ্জিন ফুয়েল সিস্টেম, ইলেকট্রনিক ইঞ্জিন কন্ট্রোল, ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার, হাইড্রোলিক সিস্টেম, এয়ার কন্ডিশনিং, ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম ইত্যাদির মান যাচাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা পরিচালনা এবং ইঞ্জিনের পাওয়ার অ্যাসুরেন্স চেক করার কার্যক্রম শুরু করেছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে এ দাবি করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সমপ্রতি এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় পতিত হয়, যার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষে নির্মাতা কোম্পানি বোয়িংয়ের পক্ষ থেকে রক্ষণাবেক্ষণ-সম্পর্কিত যেসব নির্দেশনা দেয়া হবে তা সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়নের জন্য বিমানের প্রকৌশল বিভাগ প্রস্তুত রয়েছে। বোয়িংয়ের উড়োজাহাজগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে বিমানের প্রকৌশল বিভাগ এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স প্রোগ্রাম অনুসরণ করে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সর্বদা যাত্রী নিরাপত্তা ও মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং উড়োজাহাজ রক্ষণাবেক্ষণের প্রতিটি ধাপ আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সম্পন্ন করে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

ড্রিমলাইনার রক্ষণাবেক্ষণে বাড়তি নজর দিচ্ছে বাংলাদেশ বিমান
- আপলোড সময় : ১৮-০৭-২০২৫ ০৭:৪৬:১৩ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৮-০৭-২০২৫ ০৭:৪৬:১৩ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ